হিমুর আছে জল pdf বই ডাউনলোড । কানের কাছে কেউ একজন বলছে, হিমু, চোখ মেল! আমি চোখ মেলতে পারছি না। চোখের পাতা সীসার মতো ভারী।
ভারী প্রসঙ্গে চোখের পাতাকে সীসার সঙ্গে তুলনা করা হয় কেন? অনেক ধাতু আছে সীসার চেয়ে ভারী, যেমন লোহা। আমরা কখনো বলি না, চোখের পাতা লোহার মতো ভারী। লেখকরা এক একটা জিনিস চালু করেন, সেগুলি চালু হয়ে যায়।
প্রাচীনকালে বাতাসে প্রদীপ নিভত, তখন ধপ করে শব্দ হতো। লেখকরা লিখলেন, ‘দপ’ করিয়া প্রদীপ নিভিয়া গেল। তা-ই চালু হয়ে গেল। ইলেকট্রিক বাতি নেভা প্রসঙ্গেও এখনকার লেখকরা লিখেছেন, দপ করে বাল্ব নিভে গেল।
আরও দেখুনঃ হিমুর মধ্যদুপুর
আমি ডান পায়ে ঝাঁকি দেওয়ার চেষ্টা করলাম। ঘুম তাড়ানোর সহজ উপায় পা দিয়ে ঝাঁকি দেওয়া। পারলাম না। হাত-পা যেন অবশ হয়ে গেছে। গায়ের ওপর দিয়ে ঠান্ডা হাওয়া বইছে। ভালোই ঠান্ডা লাগছে। এতে ঘুম আরও গাঢ় হচ্ছে। হাত-পা গুটিয়ে কুকুরগুলি নিদ্রায় রয়েছে। মাছের তেলে মাছ ভাজার মতো নিজের ওমে নিজে গরম হওয়া।
-হিমু, চোখ মেল!
আবার শুনলাম। কোনো একজন আমার ঘুম ভাঙানোর জন্যে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। সেই কোন একজনের গলা ক্রিকেটের ধারাভাষ্যকার চৌধুরী জাফরুল্লাহ শরাফতের মতো ভারী। উনি আমাকে কেন ডাকবেন বুঝতে পারছি না। ক্রিকেটের সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। এটা কি কোন স্বপ্নদৃশ্য? মনে হয় না।
স্বপ্নদৃশ্য হলে যে ডাকছে তাকে দেখা যেত। চৌধুরী জাফরুল্লাহ সাহেবকে স্বপ্নে দেখারও কিছু নেই। আমি বিড়বিড় করে বললাম, আপনি যে-ই হোন, কানের কাছে ঘ্যানঘ্যান করবেন না। বলতে বলতে ঘুম ভেঙ্গে গেল।
আরও দেখুনঃ হিমুর বাবার কথামালা
প্রথম কিছুক্ষণেই বুঝতে পারলাম না আমি কোথায়। ঘুম ভাঙ্গার পর নিজের অবস্থান বুঝতে দশ সেকেন্ড সময় লাগে। নিয়ম হচ্ছে এই দশ সেকেন্ড চোখ বন্ধ করে থাকা। তারপর চোখ মেলে জের অবস্থান বুঝে নেওয়া। আমি তাই করলাম। অবস্থান জানা গেল।
আমি শুয়ে আছি, দোতলা লঞ্চের ডেকে। অন্ধকারে লঞ্চ চলছে। ইঞ্জিনের ধক ধক শব্দ হচ্ছে। একজন বৃদ্ধ ছাড়া আমার আশপাশে কেউ নেই। বৃদ্ধের চেহারা হোচিমিনের মতো। বয়স সত্তরের বেশি। পিঠ ধনুকের মতো।
নিচে হিমুর আছে জল pdf বই এর স্ক্রিনশট ও ডাউনলোড লিংক দেওয়া হলোঃ
প্রকাশকঃ বইয়ের ধরণঃ উপন্যাস বইয়ের সাইজঃ 3.96 MB প্রকাশ সালঃ 2010 ইং বইয়ের লেখকঃ হুমায়ূন আহমেদ
ডাউনলোড সার্ভার-১ঃ Download Now