১৯৭১ pdf বই ডাউনলোড । মীর আলি চোখে দেখে না। আগে আবছা-আবছা দেখত। দুপুরের রোদের দিকে তাকালে হলুদ কিছু ভাসত চোখে। গত দু’বছর ধরে তাও ভাসছে না। চারদিকে সীমাহীন অন্ধকার। তার বয়স প্রায় সত্তুর। এই বয়সে চোখ-কান নষ্ট হতে শুরু করে। পৃথিবী শব্দ ও বর্ণহীন হতে থাকে।
কিন্তু তার কান এখনো ভালো। বেশ ভালো। ছোট নাতনীটি যত বার কেঁদে ওঠে তত বারই সে বিরক্ত মুখে বলে, ‘চুপ, শব্দ করিস না’। মীর আলি আজকাল শব্দ সহ্য করতে পারে না। মাথার মাঝখানে কোথায় যেন ঝনঝন করে। চোখে দেখতে পেলেও বোধহয় এরকম হত-আলো সহ্যহত না। বুড়ো হওয়ার অনেক যন্ত্রণা। সবচেয়ে বড়ো যন্ত্রনা – রাত-দুপুরে বাইরে যেতে হয়। এক-একা যাওয়ার উপায় নেই।
বদিউজ্জামান তার বড় ছেলে। মধুবন বাজারে তার একটা মনিহারী দোকন আছে। রোজ সন্ধ্যায় দোকান বন্ধ করে সাত মাইল হেঁটে সে বাড়ি আসে। পরিশ্রমের ফলে তার ঘুম হয় গাঢ়। সে সাড়া দেয় না। মীর আলি ডেকেই চলে – ‘বদি, ও বদি। বদিউজ্জামান।’ জবাব দেয় তার ছেলের বৌ অনুফা। অনুফার গলার স্বর অত্যন্ত তীক্ষ্ণ। সেই তীক্ষ্ণ স্বর কানে এলেই মীর আলির মাথা ধরে, তবু সে মিষ্টি সুরে বলে, ‘ও বৌ, এট্টু বাইরে যাওন দরকার। বদিরে উঠাও।’
আরও দেখুনঃ আমিই মিসির আলি বাঘবন্দি মিসির আলি
অনুফা তার স্বামীকে জাগায় না। নিজেই কুপি হাতে এগিয়ে এসে শ্বশুড়ের হাত ধরে। বড় লজ্জা লাগে মীর আলির। কিন্তু উপায় কী? বুড়ো হওয়ার অনেক যন্ত্রণা। অনেক কষ্ট।
মীর আলি নরম স্বরে বলে, ‘চাঁদনি রাইত নাকি, ও বৌ।’
-জ্বি-না।
চউখে ফসর-ফসর লাগে। মনে হয় চাঁদনি।
-না, চাঁদনি না। এই খানে বসেন। এই নেন বদনা।
অনুফা দুরে সরে যায়। মীর আলি ভারমুক্ত হয়। অন্য রকম একটা আনন্দ হয় তার। ইচ্চা করে আরো কিছুক্ষণ বসে থাকতে।
অনুফা ডাকে – আব্বাজান হইছে?
-হুঁ।
উঠেন। বইসা আছেন কেন?
-ফজর ওয়াক্তের দেরি কত?
দেরি আছে। আব্বাজান উঠেন।
মীর আলি অনুফার সাহায্য ছাড়াই উঠোনে ফিরে আসে। দক্ষিণ দিক থেকে সুন্দর বাতাস দিচ্ছে।
নিচে ১৯৭১ pdf বই এর স্ক্রিনশট ও ডাউনলোড লিংক দেওয়া হলোঃ
প্রকাশকঃ বইয়ের ধরণঃ এডভেঞ্চার বইয়ের সাইজঃ 6.44 MB প্রকাশ সালঃ ইং বইয়ের লেখকঃ হুমায়ূন আহমেদ
ডাউনলোড সার্ভার-১ঃ Download Now