মৃন্ময়ী pdf বই ডাউনলোড । আমার বাবার নাম মইনু মিয়া। খুবই হাস্যকার নাম। কাঠ মিস্ত্রি বা দরজিদের এরকম নাম থাকে। আমার দাদাজান দরজি ছিলেন, এবং তিনি তাঁর মতো করেই ছেলের নাম রেখেছেন। তিনি স্বপ্নেওে ভাবেননি, তাঁর ছেলে গিরায় হিসাব না করে, নেনোমিটার, পিকো সেকেন্ডে হিসাব করবে। আমার বাবা মইনু মিয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফলিত পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক হিসেবে জীবন শুরু করবেন।
এখন অবশ্য তার নাম মাইন খান। সেকেন্ড ইয়ারে পড়ার সময়ই তিনি প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে এফিডেভিট করে নাম বদলেছেন। তবে তাঁর রক্তে দরজির যে ব্যাপারটা পৈতৃক সূত্রে চলে এসেছে তা এখনো আছে। আমার বাবা মাইন খান বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি ছেড়ে দিয়ে গার্মেন্টসের কারখানা দিয়েছেন।
গার্মেন্টসের নাম মৃন্ময়ী এ্যাপারেলস’। মৃন্ময়ী আমার নাম। ভালো নাম মৃন্ময়ী , ডাক নাম মৃ। আমার ভাবতে খুবই খারাপ লাগে যে, বিদেশী লোকজন বাবার গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির শার্ট গায়ে দিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাদের ঘাড়ের সঙ্গে যে স্টিকার লেগে আছে সেখানে লেখা মৃন্ময়ী। অচেনা মানুষের গায়ের ঘামের গন্ধে আমাকে বাস করতে হচ্ছে।
আরও দেখুনঃ মৃন্ময়ীর মন ভালো নেই pdf বই ডাউনলোড নবনী pdf বই ডাউনলোড
বাবা যেমন ইউনিভার্সিটিতে সেকেন্ড ইয়ারে উঠে এফিডেভিট করে তাঁর নাম বদল করেছেন, আমি নিজেও তাই করব। অন্য কোনো নাম ঠিক করব, যে নাম কেউ ঘাড়ে করে ঘুরে বেড়াবে না। আমি মনে মনে নাম খুঁজে বেড়াচ্ছি। বাবাকেও একদিন বললাম, বাবা, আমাকে সুন্দর একটা নাম দেখে দাও তো। আমি ঠিক করেছি নাম বদলাব।
বাবা বিস্মিত হয়ে বললেন, মৃন্ময়ী তো খুবই সুন্দর নাম।
নামটায় ঘামের গন্ধ বাবা।
ঘামের গন্ধ মানে কী ? বুঝিয়ে বলতো। তোর সব কথা বোঝার মতো বুদ্ধি আমার নেই।
পরে একসময় বুঝিয়ে বলব। আজ না।
এখনই বল। মৃন্ময়ীর সঙ্গে ঘামের সম্পর্ক কী?
বাবা চোখ থেখে চশমা খুলে তাকিয়ে রইলেন। খুব অবাক হলে তিনি এই কাজটা করেন। চোখ থেকে চশমা খুলে ফেলেন। আমার ধারণা তিনি এই কাজটা করেন যাতে অন্যরা তাঁর বিস্মিত দৃষ্টি দেখতে না পায়।
আমার বাবা খুবই বুদ্ধিমান একজন মানুষ। এক থেকে দশের মধ্যে যদি বুদ্ধির স্কেল করা হয় সেই স্কেলে বাবার বুদ্ধি হবে ১৩, দশের চেয়েও তিন বেশি।
নিচে মৃন্ময়ী pdf বই এর স্ক্রিনশট ও ডাউনলোড লিংক দেওয়া হলোঃ
প্রকাশকঃ বইয়ের ধরণঃ উপন্যাস বইয়ের সাইজঃ 10.8 MB প্রকাশ সালঃ ইং বইয়ের লেখকঃ হুমায়ূন আহমেদ
ডাউনলোড সার্ভার-১ঃ Download Now